আকাশ রহমান,স্টাফ রিপোর্টারঃ ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সুক নদীর বুড়ির বাঁধে চলছে মাছ ধরার উৎসব; এতে অংশ নিয়েছে উঠেছে জেলার বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। প্রতি বছর কার্তিক মাসের প্রথমদিনে এ উৎসব হয়। সোমবার (১৮অক্টোবর) সকাল ৮টার দিকে উপজেলার আক্চা ও চিলারং ইউনিয়নের মাঝামাঝি সুক নদীর উপর নির্মিত বুড়ির বাঁধ এলাকায় এতে অংশ নেয় বিভিন্ন শ্রেণি পেশার লোকজন। জানা গেছে,১৯৮০ সালের দিকে শুষ্ক মৌসুমে এ অঞ্চলের কৃষি জমির সেচ সুবিধার জন্য এলাকায় একটি জলকপাট নির্মাণ করা হয়। জলকপাটে আটকে থাকা সেই পানিতে প্রতিবছর মৎস্য অধিদপ্তরের উদ্যোগে বিভিন্ন জাতের মাছের পোনা ছাড়া হয়। আর এ পোনাগুলোর দেখভাল করে আক্চা ও চিলারং ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি)।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো: খালিদুজ্জামান বলেন, “৫০ একর এলাকাজুড়ে সুক নদীর উপর নির্মিত বুড়ির বাঁধ মৎস্য অভয়াশ্রম। সারা বছর কাউকে এখানে মাছ ধরতে দেওয়া হয় না। শুধু জমানো পানি ছেড়ে দেওয়ার পর এ সময়ই মাছ ধরার অনুমতি দেওয়া হয়।”
সরেজমিনে দেখা যায়, মাছ ধরতে জাল, খইয়া জাল, পলো ও মাছ রাখার খালুই নিয়ে গ্রাম ও শহরসহ বিভিন্ন এলাকার শত শত মানুষ মাছ ধরার উৎসবে যোগ দিয়েছে। আবার কেউ কেউ হাত দিয়ে মাছ ধরার চেষ্টা করছে। আর মাছ ধরার এই দৃশ্য এক পলক দেখতে নদীর চারপাশে ভিড় জমায় অসংখ্য মানুষ।
সব মিলে বুড়ির বাঁধ এলাকা পরিণত হয়েছে এক মিলনমেলায়।
বীরগঞ্জ থেকে ঠাকুরগাঁওয়ের বুড়িরবাঁধ এলাকায় মাছ ধরতে এসেছেন আরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, “এর আগের বছরও এখানে এসেছিলাম মাছ ধরতে, ঠিক এবারও এসেছি। আমার সঙ্গে এলাকার আরও কয়েক জন এসেছে। ভোর ৫টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত আমরা প্রায় ১৫ কেজি বিভিন্ন জাতের মাছ ধরেছি।”
সদরের রুহিয়া এলাকার বাপ্পারাজ ইসলাম বলেন, “এ বছর এই বাঁধে গতবারের তুলনায় মাছের পরিমাণ কম। জমানো পানি ছেড়ে দেওয়ার পর বিভিন্ন এলাকার মাছ প্রেমিরা দলে দলে এসেছে মাছ ধরতে। বুড়িরবাঁধ এলাকা মাছ ধরার উৎসবে পরিণত হয়েছে। ”
বাঁধ এলাকায় মাছ কিনতে আসা মাছের পাইকার মেডেল আলী জানান, বিভিন্ন স্থান থেকে অনেক মাছপ্রেমি মাছ ধরতে এসেছে । অনেকেই আবার মাছ ধরে বিক্রি করছেন। যারা মাছ বিক্রি করছেন তাদের কাছ থেকে মাছ ক্রয় করতেছি। পরে এ মাছ গুলো বাজারে বিক্রি করব।
বালিয়াডাঙ্গী থেকে মাছ কিনতে আসা নাজির উদ্দিন বলেন, গতকাল রাতেই শুনেছি বুড়িরবাঁধে মাছ ধরা হচ্ছে। তা শুনেই সকাল সকাল বন্ধুদের সাথে এসেছি মাছ কিনতে। এখান থেকে দেশী প্রজাতির ৩ কেজি মাছ কিনলাম ৬শত টাকা দিয়ে। এলাকায় পুকুরে মাছ ধরতে দেখছ কিন্তুু নদীতে এমন করে মাছ ধরার দৃশ্য এর আগে কখনও চোখে পড়েনি।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আক্চা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুব্রত কুমার বর্মণ বলেন, “প্রত্যেক বছরের কার্তিক মাসের প্রথম দিনে বুড়িরবাঁধের জমানো পানি ছেড়ে দেওয়া হয় এবং মাছ ধরার জন্য উন্মুক্ত করা হয়।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।